স্থানীয় সরকারের পরে জাতীয় নির্বাচন দিন : জামায়াত আমির
স্থানীয় সরকারের পরেই যৌক্তিক সময় জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজারস্থ বিশ্বরোডে অনুষ্ঠিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
জামায়াত আমির বলেন, সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ ও পৌরসভার সেবা দিচ্ছেন প্রশাসকরা। জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায় নেই।
এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন অভিভাবক শূন্য, জনপ্রতিনিধি ও সেবক শূন্য। তাই আমরা বলছি, জনদূর্ভোগ নিরসনের জন্য তাড়াতাড়ি স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিন। এসব নির্বাচন হলে জনগণের দুর্ভোগ লাগব হবে। তারপর অবশ্যই যৌক্তিক সময়ে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।
তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে মৌলিক কিছু সংস্কার জনগণ চায়।
তিনি বলেন, অনেকেই বলেন আগে সংস্কার কেন? আমরা বলছি, মানুষের খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য সংস্কার প্রয়োজন। নির্বাচনে কালো টাকা ও পেশী শক্তির প্রভাব যেনো সৃষ্টি না হয়, সে জন্য সংস্কার প্রয়োজন। যাতে করে দেশের প্রত্যেকটা ভোটার, তাদের ভোট দিতে পারেন।
তবে সরকার জাতীয় নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করুক, এটাও কাম্য নয়। তাই আমরা বলছি, যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দুনিয়ার সকল দেশে উন্নয়নের কাজ করে স্থানীয় সরকার। আর আমাদের দেশে স্থানীয় পরিষদকে বঞ্চিত করে এ কাজ করেন এমপি-মন্ত্রীরা। সংবিধান বলে এ কাজ এমপি-মন্ত্রীদের নয়।
এমপিরা সংসদে আইন পাশ করবেন। স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধরা সুষম উন্নয়ন করবেন।
আনুপাতিক হারে নির্বাচন হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, যে দল যত পার্সেন্ট ভোট পাবে, সেই দল সংসদে ততটা আসন পাবে। তখন প্রত্যেকটা ভোট কাজে লাগবে।
ডা. শফিকুর রহমান বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বলেন, আমরা আপনাদের বিনয়ের সাথে বলবো। আপনারাও মজলুম ছিলেন, আমরাও মজলুম ছিলাম। এমন কোনো কাজ করবেন না, যা করলে আমাদের শহীদদের আত্মা কষ্ট পাবে।
নেতা-কর্মীদের সামনে জামায়াত আমির আরো বলেন, যদি সৎভাবে বেঁচে থাকার অবলম্বন না থাকে, আমরা আপনাদের আস্বস্ত করছি, আল্লাহ-তায়ালা যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে আমরা আপনাদের ভাগ দিবো। আর চাঁদাবাজি, দখলদারী করবেন না। আর মানুষকে কষ্ট দিবেন না।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবারের মধ্যে এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি না দিলে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে তিন কোটি নেতাকর্মী নিয়ে স্বেচ্ছায় জেলে যাব।
কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও নায়েবে আমির অ্যাড. মাসুদুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে পথসভায় আরো বক্তব্য দেন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি এটিএম মাসুদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি কামাল উদ্দিন, সাবেক জেলা আমির মাওলানা আবদুর রহিম পাটওয়ারী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আতিকুর রহমান।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়ার সঞ্চালনায় স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য দেন, জেলা সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক আবুল হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, আবু নসর আশরাফী, শহর আমির অ্যাড. মো. শাহজাহান খান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি অধ্যাপক রুহুল আমিন, ফরিদগঞ্জের জামায়াতের আমির ইউনুস হেলাল, শাহরাস্তি আমির মোস্তাফা কামাল, হাজীগঞ্জ উপজেলার আমির বিএম কলিমুল্লাহ, পৌরসভা আমির আবুল হাসানাত, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইব্রাহীম খলিল, চাঁদপুর শহর সভাপতি মোহররম আলী প্রমুখ।
কমেন্ট বক্স